মেঘে মেঘে ঘর্ষণের ফলে সৃষ্ট
ধনাত্মক ও ঋনাত্মক আয়নের প্রতিক্রিয়ায় হয় বজ্রপাত। তা সরাসরি কোন পরিবাহীর মাধ্যমে
নেমে আসে মাটিতে। নামার সময় মাটির সাথে কোন প্রতিবন্ধকতা পেলে তাকেই মাধ্যম হিসেবে
ব্যবহার করে বজ্রপাত।
কিউমিলোনিম্বাস মেঘের থেকে ভারী বৃষ্টি, বজ্রপাত, শিলাবৃষ্টি, দমকা হাওয়া এমনকি টর্নেডো হতে পারে। এ মেঘের বৈশিষ্ট্য হচ্ছে ৩০-৬০ মিনিটের মধ্যেই বড় হয়ে সর্বত্র ছড়িয়ে যায়। আমাদের দেশে মার্চ থেকে মে মাস পর্যন্ত এই মেঘের দেখা মেলে।
আমরা বিজলী চমকানোর পরে শব্দ শুনতে পাই। এ শব্দ শোনার সময়ের উপর ভিত্তি করে বিজলী ঝড় বা বজ্রপাতের দূরত্ব জানতে পারি। চলুন নিয়মটি জানি:
বিদ্যুৎ চমকানোর পর শব্দ শোনার সময়কে ৩ দ্বারা ভাগ করে বজ্রঝড়ের দূরত্ব কিলোমিটারে নির্ণয় করা যায়। অর্থাৎ বিজলী চমকানোর ১৫ সেকেন্ড পর শব্দ শোনা গেলে বজ্রপাতের দূরত্ব ১৫/৩=৫ কিলোমিটার।
বজ্রবৃষ্টি কত দূরে আছে সেসব হিসেব পরে হবে। সবার আগে এমন ঝড় শুরু হলে যা করণীয় তাই করতে হবে। চলুন জানা যাক করণীয়:
- বাইরে থাকলে দ্রুত কোথাও যেমন, ঘরে আশ্রয় নেয়া। তবে কোন গাছের নিচে আশ্রয় নেয়া যাবে না।
- কোথাও আশ্রয় না পেলেও উঁচু জায়গায় থেকে দূরে সরে যেতে হবে।
- খোলা মাঠে থাকলে প্লাস্টিকের স্যান্ডেল পড়ে নিচু হয়ে থাকা। তবে কোন অবস্থাতেই মাটিতে শুয়ে থাকা যাবে না।
- বাসায় থাকলে জানালার পাশে না থাকা। জানালা বন্ধ রাখবেন।
- বজ্রপাত বা ঝড়ের সময় গবাদী প্রাণীকে খোলা মাঠে না রাখা।
- চলন্ত অবস্থায় গাড়ি থামিয়ে অবস্থান নেয়া।
- পানির কাছাকাছি এবং পানিতে বা পুকুরে না থাকা।
- বিদ্যুতের খুঁটি বা তারের নিচে না থাকা।
- বাসার বৈদ্যুতিক লাইন যথাসম্ভব বন্ধ রাখা, ডিস এন্টেনার লাইন, ধাতব কল, টেলিফোন লাইন স্পর্শ করবেন না। পানির ট্যাপ ব্যবহারের সময় যদি ছাদের চৌবাচ্চায় বজ্রপাত হয় তবে তা আপনাকেও আহত করতে পারে।
- মাটির সাথে যুক্ত কোন ধাতব পদার্থে হাত বা হেলান না দেয়া। খোলা মাঠে থাকাকালে খুব কাছে বজ্রপাত হতে থাকলে হাতে কোন ধাতব বস্তু যেমন, আংটি, চাবি, কাস্তে, কোদাল, মোবাইল ইত্যাদি কমপক্ষে ৬০ ফুট দূরে রাখা।
- প্রতিটি ঘরের উপরে ধাতব বস্তু দিয়ে তারের মাধ্যমে সরাসরি মাটিতে আর্থিংয়ের ব্যবস্থা করা।
বজ্রপাতে কেউ আহত হলে বৈদ্যুতিক শকে আহতদের মতই চিকিৎসা করতে হয়। শ্বাস-প্রশ্বাস সচল করতে হয়। ডাক্তার ডাকা বা হাসপাতালে নেয়ার কাজটি দ্রুত করতে পারলেই ভাল।
শিলাবৃষ্টির সময় করণীয়:
আমাদের দেশে মার্চ থেকে মে মাসে শিলাবৃষ্টি হওয়ার সম্ভাবণা বেশি থাকে। যখন শিলাবৃষ্টি হয় তখন কোনভাবেই বাইরে থাকা যাবে না। ছোট ছোট বাচ্চাদের শিলা কুড়ানোর প্রবণতা থাকে। এটিকে অবশ্যই নিরুৎসাহিত করতে হবে।
শিলার আকার যত বড় হয় তার পড়ন্ত গতিও তত বেশি হয়। ২ সে.মি. এর শিলার গতি ৬০ কি.মি/ঘন্টা এবং ৫ সে.মি. শিলার গতি ১২০ কি.মি/ঘন্টা। অর্থাৎ একটি শিলা তার আকার অনুযায়ী ঠিক এই পরিমাণ গতিতে আঘাত করবে!
১৯৮৬ সালের এপ্রিল মাসে গোপালগঞ্জে ১ কেজি ওজনের শিলা পড়েছিল। এমন শিলা একজন মানুষকে সহজেই মারতে পারবে।
সূত্র: বাংলাভিশন, ইন্টারনেট।