শুষ্ক আবহাওয়া এবং ধুলোবালির সংস্পর্শে বেশি থাকলে ত্বক অত্যাধিক শুষ্ক ও রুক্ষ হয়ে যায়। এর ফলে শরীরের অনেক অংশই শুষ্ক হয়ে ফাটা শুরু করে বিশেষ করে পায়ের গোড়ালি এবং পায়ের আঙ্গুলের মাথা। কারন পা ই ধুলোবালির সংস্পর্শে বেশি থাকে।
শীতকালে এই সমস্যা আরো প্রকট আকার ধারন করে। তবে শীতকাল ছাড়াও অন্য সময়েও এই সমস্যা হতে পারে। এর সবচেয়ে সাধারণ কারন হচ্ছে শুষ্কত্বক। যদিও এটা ক্ষতিকর নয় তবে ফাটা গভীর হলে তা বেদনাদায়ক হয় এবং অনেক সময় তা থেকে রক্তপাতও হতে পারে।
আবার অনেক সময় ইনফেকশনও হতে পারে বিশেষ করে যাদের ডায়াবেটিস বা বার্ধক্য জনিত কারনে অসুস্থতা রয়েছে তাদের। তাই গোড়ালি ফাটার প্রতিরোধ শুরুতেই করা উচিত।
এখানে পায়ের গোড়ালি ফাটা প্রতিরোধের ৩টি সহজলভ্য ঘরোয়া উপায় আপনাদের জানাচ্ছি।
গোড়ালি মাজা:
গোড়ালি ফাটা থেকে
মুক্তি পেতে শক্ত এবং মরা ত্বকগুলো ঘষে তুলে ফেলতে হবে। তবে ঘষার আগে গোড়ালি কুসুম
গরম পানিতে বেশ কিছুক্ষণ ভিজিয়ে নরম করে নিলে মাজতে সহজ হবে।
- ঘুমানোর আগে কুসুম গরম পানির সাথে কিছুটা লিকুইড সোপ মিশিয়ে নিয়ে তাতে পা ২০ মিনিটের মত ভিজিয়ে রেখে পা ঘষার পাথর দিয়ে আলতোভাবে ঘষে মরা কোষগুলো তুলে ফেলুন।
- এবার পরিস্কার পানিতে পা ধুয়ে নরম তোয়ালে দিয়ে মুছে নিয়ে তাতে ভালো কোনো ফুট ক্রিম বা ময়েসচেরাইজার বা কিছু না থাকলে ভেজলিন লাগিয়ে সুতির মোজা পড়ে থাকুন সারারাত।
লেবুর রস:
পায়ের গোড়ালি ফাটা
থেকে মুক্তি পেতে লেবুর রস ব্যবহার করতে পারেন। এর ক্ষারীয় প্রভাব ত্বকের মরা কোষ
দূর করতে সাহায্য করে। লেবুর রস ব্যবহারের মাধ্যমে আপনি গোড়ালির ফাটা ত্বকের
পরিবর্তে নরম ও মসৃণ ত্বক পেতে পারেন। গোড়ালিতে লেবুর রস ব্যবহার করতে পারেন
বিভিন্ন ভাবে।
- একটি বড় লেবুকে মাঝামাঝি অর্ধেক করে কেটে নিয়ে একটি অংশ দিয়ে ফাটা গোড়ালি ঘষুন ৫ মিনিটের মত তারপর আলতো ভাবে নরম কাপড় বা ব্রাশ দিয়ে গোড়ালি ঘষে পানিতে ধুয়ে ফেলুন।
- তারপর যেকোনো ক্রিম লাগিয়ে নিন পায়ে। এভাবে নিয়মিত কয়েকদিন করার পরই দেখবেন গোড়ালি ফাটা কমে গেছে।
অলিভ অয়েল:
অলিভে অলিভ ব্যবহারের
মাধ্যমেও গোড়ালি ফাটা প্রতিরোধ করা সম্ভব।
- তুলার বলে সামান্য অলিভ অয়েল নিয়ে পায়ের গোড়ালিতে ঘুরিয়ে ঘুরিয়ে মেসেজ করুন ১০-১৫ মিনিট। তারপর সুতির মোজা পড়ে থাকুন ১ ঘণ্টা।
- এছাড়া অলিভ অয়েল দিয়ে ফুট ক্রিম বানিয়েও মেসেজ করতে পারেন। ১ টেবিল চামচ অলিভ অয়েলের সাথে কয়েক ফোটা যেকোনো এসেন্সিয়াল অয়েল যেমন লেমন অয়েল বা ল্যাভেন্ডার অয়েল মিশিয়ে তাতে সমপরিমান পানি মিশিয়ে রাখুন। ব্যবহারের আগে ভালো করে ঝাকিয়ে নিন।
আশা রাখি উপরোক্ত উপায় গুলো যেকোনো একটি বা একাধিক টি প্রয়োগ করে পায়ের গোড়ালি ফাটার মত যন্ত্রণাদায়ক অবস্থা থেকে মুক্তি পেতে পারবেন খুব সহজেই।
-
লেখক: জনস্বাস্থ্য পুষ্টিবিদ, এক্স ডায়েটিশিয়ান,
পারসোনা হেল্থ, খাদ্য ও
পুষ্টিবিজ্ঞান (স্নাতকোত্তর) (এমপিএইচ), নিউট্রিশন এবং ডায়েট
থেরাপিতে বিশেষ প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত।